প্রকাশিত: Mon, Jun 19, 2023 11:18 AM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 12:39 PM

মুক্তিলাভের পর আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান কারাবাস আমাকে পরিশুদ্ধ করেছে

এ্যানি আক্তার: বঙ্গবন্ধুর ঘাতক, যুদ্ধাপরাধী, এরশাদ শিকদার, বাংলাভাইয়ের ফাঁসি কার্যকর করা এই আলোচিত জল্লাদ রোববার (১৮ জুন) কেরানীগঞ্জ কারাগারের বাইরে এসে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি অতীতে যত অপরাধ করেছি, সে জন্য সাজা খেটেছি। কারাবাস আমাকে পরিশুদ্ধ করেছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ফাঁসি কার্যকর করার আগে তার আবেগ কাজ করেছে। তবে এ কাজ কাউকে না কাউকে করতেই হতো। সূত্র: প্রথম আলো

দীর্ঘ ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন কাটানোর পর এখন শাহজাহান মুক্ত। তিনি বলেন, এখন খুব আমার খুব ভালো লাগছে। পরিবারের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এক বোন আছে। তাকে কখনো দেখিনি। কিন্তু ফোনে কথা হয়েছে। সে আমাকে কোনো দিন দেখতেও আসেনি। সূত্র: বিডিনিউজ ২৪ ডটকম

কারা সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ ঘাতক, ৬ জন যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ বাংলাদেশের অতি পরিচিত ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছেন শাহজাহান। রোববার বেলা পৌনে ১২টায় কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সূত্র: সময় টিভি

সরকারের কাছে একটা থাকার জায়গার আবেদন জানিয়ে শাহজাহান বলেন, আমার ঘর নাই, বাড়ি নাই। আমি আরেকজনের বাড়িতে উঠব। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই অনুরোধ জানাই, আমাকে যেন একটা বাড়ি দেওয়া হয়।

আপাতত রাজধানীতে তার এক কারাসঙ্গীর বাসায় গিয়ে উঠছেন জানিয়ে শাহজাহান বলেন, আমার সঙ্গে কারাগারে একজন ছিলেন। তিনি খুব ভালো মানুষ। তার বাসায় যাচ্ছি আমি। কিছুদিন সেখানেই থাকব।

সমাজের অতি পরিচিত লোকজনের ফাঁসি কার্যকরে ভূমিকা রেখেছেন তিনি, কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন কি না জানতে চাইলে শাহজাহান বলেন, আমার হুকুমে ফাঁসি হয়নি। রাষ্ট্রের হুকুমে আমি ফাঁসি দিছি।

কারা সূত্রে জানা যায়, ‘জল্লাদ’ শাহজাহানের পুরো নাম শাহজাহান ভূঁইয়া। তিনি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে। ৭৩ বছর বয়সী শাহজাহান ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত। তার কয়েদি নম্বর ছিল ২৫৮৯/এ। মুক্তির আগ পর্যন্ত তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান জল্লাদ ছিলেন। সূত্র: ঢাকা পোস্ট

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৯১ সালে গ্রেপ্তার হয়ে প্রথমে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে ছিলেন। সর্বশেষ তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কয়েদি ছিলেন। শাহজাহান ভূঁইয়ার মোট সাজা হয়েছিল ৪২ বছর। তার মধ্যে তিনি ১০ বছর ৫ মাস ২৮ দিন মওকুফ পেয়েছেন। প্রায় ৩২ বছরের সাজা শেষে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। কারাগারের মধ্যে ভালো কাজ ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে জল্লাদের দায়িত্ব পালনের জন্য তার সাজার ওই মেয়াদ মওকুফ করা হয়। শাহজাহানের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষ তার জরিমানার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে। সম্পাদনা: তারিক আল বান্না